Header Ads

Header ADS

এক চীন নীতি নিয়ে ট্রাম্পের ডিগবাজি

অবশেষে 'এক চীন নীতিতে' সমর্থন দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ফোনালাপের পর ট্রাম্প ওই নীতি সমর্থনে রাজি হয়েছেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। উল্লেখ্য, তাইওয়ানকে 'অখ-' চীনের অংশ মনে করার নীতিই 'এক চীন' নীতি বলা হয়ে থাকে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার থেকেই এ সংক্রান্ত চীন-মার্কিন কূটনীতি বাতিলের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে শুক্রবার জিনপিংয়ের সঙ্গে ফোনালাপে অবশেষে সেই নীতিকেই সমর্থন দিলেন তিনি। সংবাদসূত্র : বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস
হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলা হয়, 'রাতে দুই নেতা দীর্ঘ সময় ধরে ফোনালাপ করেছেন। তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। দুই নেতার ফোনালাপ অত্যন্ত আন্তরিক ছিল এবং তারা পরস্পরকে সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।' বৃহস্পতিবার চীনের প্রেসিডেন্টকে চিঠি পাঠিয়ে সম্পর্কের বরফ ভাঙার প্রথম পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ট্রাম্প। জবাবে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে চীনের নেতা মাও সে-তুঙ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের মধ্যে 'এক চীন' নীতির প্রতি মার্কিন সমর্থনের ব্যাপারে ঐকমত্য হয়। ১৯৭৯ সাল থেকে তাইওয়ানের সঙ্গে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই যুক্তরাষ্ট্রের। এরপর থেকে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেননি। কিন্তু নির্বাচিত হয়েই তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে বিতর্কের জন্ম দেন ট্রাম্প যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে চীন।
পরে এক সাক্ষাৎকারে 'যুক্তরাষ্ট্র এক চীন নীতি মানতে বাধ্য নয়' বলে মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প, যার নিন্দা জানিয়ে ওয়াশিংটনকে সতর্কও করেছিল বেইজিং। যদিও নির্বাচনী প্রচারের শুরু থেকেই ট্রাম্প চীনের বাণিজ্যনীতি এবং দক্ষিণ চীন সাগরে আধিপত্য বিস্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়ে আসছিলেন। বিশ্লেষকদের মতে, এক চীন নীতিতে ট্রাম্পের এই সমর্থনের ফলে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে শিনজো আবের বৈঠক
এদিকে, শুক্রবার বিকালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। বর্তমানে তিনি স্ত্রীসহ যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় সফরে আছেন। বাণিজ্য ও প্রতিরক্ষা প্রশ্নে টানাপড়েনের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন পর্যায়ে নেয়ার লক্ষ্যেই তিনি এই সফর করছেন বলে জানানো হয়েছে।
দেশ ত্যাগের আগে টোকিওতে বিমানবন্দরে আবে সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে এমন একটি বার্তা দিতে চাই যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শাসনামলে জাপান যুক্তরাষ্ট্র জোট আরো শক্তিশালী হবে। আমরা মুক্ত ও নিরপেক্ষ আইনের ভিত্তিতে দুই দেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী করব।'
বৃহস্পতিবার আবে ও তার স্ত্রীকে বহনকারী বিমানটি ওয়াশিংটনের উপকণ্ঠে জয়েন্ট বেজ অ্যান্ড্রিউস ঘাঁটিতে অবতরণ করে। শুক্রবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এদিন বিকালে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার আগে আর্লিংটন ন্যাশনাল কবরস্থানে অজ্ঞাতনামা সৈন্যদের সমাধিতে তিনি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর এই দুই নেতার যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন। এরপর শুক্রবার সন্ধ্যায় তারা ফ্লোরিডায় যান। সেখানে ট্রাম্প তার বিলাসবহুল মার-এ-লাগো গলফ ক্লাব ও এস্টেটে আবেকে আমন্ত্রণ জানান। উল্লেখ্য, এটি এখন উইন্টার হোয়াইট হাউজ হিসেবে পরিচিত। আজ (শনিবার) তাদের গলফ খেলার কথা রয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে সিনেটের অনুমোদন পেলেন টম প্রাইস
এদিকে, ট্রাম্পের মনোনীত জর্জিয়ার রিপাবলিকান সিনেটর টম প্রাইসকে স্বাস্থমন্ত্রী হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন সংসদের উচ্চকক্ষ 'সিনেট'। শুক্রবার সিনেটরদের ভোটাভুটিতে ৫২-৪৭ ভোটের ব্যবধানে মন্ত্রী হিসেবে অনুমোদন পান তিনি। তবে অধিকাংশ ডেমোক্রেট সিনেটর তাকে ভোট দেননি।
সিনেটরদের নিজস্ব কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় অনুমোদন পান টম। টমেরও নিজম্ব কোনো সমর্থকগোষ্ঠী ছিল না। সিনেটররা জানান, টম প্রাইজ ভোটের আগে সিনেটে অনেক্ষণ অবস্থান করেছেন। প্রাইস মার্কিন 'মেডিকেয়ার মিক্সিং অ্যাফোর্ডেবল এক্টের' সহায়তায় জয়ী হয়েছেন।
নিউইয়র্কের সিনেট নেতা চাক স্কুমার জানান, প্রাইস স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে অনুমোদিত হয়েছেন। তখন টমের ওপর নিন্দা করেন অনেক সিনেট সদস্যরা। এমনকি টম প্রাইসের অবস্থান নিয়েও সব সিনেটর সমালোচনা করেন। ভারমুন্টের ডেমোক্রেটিক সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স টম প্রাইসকে সাক্ষাতের জন্য ডাকেন। উল্লেখ্য, ট্রাম্পের নির্বাচন প্রচারণার সময় প্রাইস ট্রাম্পের বিরোধিতাও করেছেন।
তবে গত মাসে ৬২ বছর বয়সী প্রাইসকে মনোনীত করার পর ট্রাম্প তাকে 'ওবামাকেয়ার' বাতিল করার কথা জানান। ট্রাম্প বলেন, 'ওবামাকেয়ারের পরিবর্তে সব মার্কিন নাগরিকের জন্য সুলভে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত আমাদের অঙ্গীকার। আর তা বাস্তবায়নে প্রাইস অত্যন্ত যোগ্যতাসম্পন্ন।
Powered by Blogger.