Header Ads

Header ADS

উত্তরপ্রদেশে মোদির অগি্নপরীক্ষা প্রথম দফার ভোট গ্রহণ শেষ

ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম দফার ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে শনিবার। এদিন দেশটির এই রাজ্যের ৪০৩টি আসনের মধ্যে পশ্চিমাঞ্চলীয় ৭৩টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মোট ৭ দফায় প্রায় এক মাসজুড়ে এই ভোট গ্রহণ চলবে। আর ভোট গণনা শুরু হবে ১১ মার্চ। রাজ্যটির শক্তিশালী দল সমাজবাদী পার্টি (সপা) এখনো সেখানকার ক্ষমতায়। সেই সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের জোটকে বিজেপি কিভাবে মোকাবেলা করবে, সেটাকেই দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তার দল বিজেপির জন্য অগি্নপরীক্ষা বলে মনে করা হচ্ছে। সংবাদসূত্র : বিবিসি, ইনডিয়ান এক্সপ্রেস
উত্তরপ্রদেশে শনিবার যে ৭৩টি কেন্দ্রে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেখানকার মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৬০ লাখ। এর মধ্যে নিবন্ধিত নারী ভোটারের সংখ্যা ছিল ১ কোটি ১৭ লাখ। ৭৩টি আসনে প্রার্থী ছিলেন মোট ৮৩৯ জন। ১৫টি জেলায় ওই ভোট গ্রহণে মোট ২৬ হাজার ৮২৩টি ভোটকেন্দ্র ছিল। নির্বাচনে নিরাপত্তার জন্য কয়েক হাজার আধাসামরিক বাহিনী ও পুলিশবাহিনী ভোটকেন্দ্র এলাকায় মোতায়েন করা হয়। এবারকার উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে প্রধান প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলগুলো হলো ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), সমাজবাদী পার্টি ও কংগ্রেস জোট এবং মায়াবতীর নেতৃত্বাধীন বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এবার উত্তরপ্রদেশের লড়াইটা মূলত বিজেপি এবং কংগ্রেস-সপা জোটের মধ্যেই হবে। বিজেপির উল্লেখযোগ্য প্রার্থী হলেন রাজনাথ সিংয়ের ছেলে পঙ্কজ সিং। তিনি নয়ডা আসন থেকে লড়েছেন। এছাড়াও ছিলেন বিজেপি নেতা শ্রীকান্ত শর্মা। তিনি মথুরা আসন থেকে লড়েছেন। তাছাড়া মেরঠ থেকে লড়েছেন লক্ষ্মীকান্ত বাজপেয়ি। উত্তরপ্রদেশে দারিদ্র্য ও দুর্নীতিকে সামনে রেখে প্রচার চালিয়েছেন মোদি। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারের নোট বাতিলকে ইস্যু করে প্রচার চালিয়েছেন রাহুল গান্ধী ও অখিলেশ যাদব।
এদিকে, নির্বাচনপূর্ব 'টাইমস নাউ' ও 'ভিএমআর'-এর এক জনমত জরিপে বিজেপিকেই এগিয়ে থাকতে দেখা গেছে। জরিপ অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় ৪০৩টি আসনের মধ্যে বিজেপি পাবে ২০২টি। শতাংশের বিচারে ওই ভোট ৩৪ শতাংশ। ২০১২ সালের নির্বাচনে ১৫৫টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। জরিপে আরো বলা হয়েছে, কংগ্রেস-সমাজবাদী জোট পাবে ১৪৭টি আসন, যা গত বিধানসভা নির্বাচনে পাওয়া আসনের চেয়ে ১০৫টি কম। আর মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি পাবে মাত্র ৪৭টি আসন। ২০১২ সালের চেয়ে ৩৩টি আসন কম।
তবে ভোটের লড়াইয়ে আগে থেকে কিছু নির্দিষ্টভাবে বলা অসম্ভব। বিশ্লেষকদের মতে, উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে যে ইস্যুগুলো সবচেয়ে বড় হতে পারে, তা হলো_ দুর্নীতি, জাতিগত বিভেদ, অপরাধ ও উন্নয়ন। মূলত এই ইস্যুগুলোর ওপর ভিত্তি করেই সাত দফায় ভোটের লড়াই চলবে। তবে শেষ মুহূর্তে সংখ্যালঘু ভোট 'ট্রাম্পকার্ড' হয়ে উঠতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। আর সেক্ষেত্রে কংগ্রেস-সপা জোট প্রধানমন্ত্রী মোদির সামনে আগামী দিনে আরো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। কালো টাকা নিয়ন্ত্রণে মোদির ৫০০ এবং ১০০০ রুপির নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে উত্তরপ্রদেশের হতদরিদ্র মানুষকে যে কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে, তার প্রভাবও পড়তে পারে এই নির্বাচনে।
'দিলি্ল অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন'-এর গবেষক অশোক মালিক বলেন, 'ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্যটিতে সরকারের জনসমর্থন যাচাই হবে নোট বাতিলের নীতি সেখানে কতটা প্রভাব ফেলেছে, তার ভিত্তিতে।'
২০১৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রেও এই রাজ্যে শক্ত অবস্থান দরকার মোদির। তাই এবার উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছে বিজেপি।
Powered by Blogger.